February 27, 2021, 11:48 am
স্টাফ রিপোর্টার ঃ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দারুল হুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার (মেয়াদোত্তীর্ন) ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এডভোকেট রহমতে এলাহীর বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। তার বিভিন্ন কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। গত গত ১১ ফেব্র“য়ারি বিকেলে স্থানীয় কটিয়াদি বাজারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায়, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রহমতে এলাহী এলাকাবাসী, কমিটির সদস্য, শিক্ষক, কর্মচারীর অজান্তে পত্রিকায় একাধিকবার ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ বাণিজ্য করার অপচেষ্টা চালান। বিধি বহির্ভূত ভাবে সিনিয়র শিক্ষক এমনকি প্রতিষ্টাতা সুপার থাকা স্বত্ত্বেও তার আপন বড় ভাই জুনিয়র শিক্ষক মো. আইয়ুব আলীকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব প্রদান করেছেন। সভায় রহমতে এলাহীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, সদ্য এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার ৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নিকট থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকা এমপিওভুক্তি করনে বিভিন্ন অফিস খরচ দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহন করার অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, ২০০৩ সালে প্রতিষ্টিত দারুল হুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা সুপার মোঃ ইমান আলী মাদ্রাসায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ২ বার আর্ট এ্যাটাক ও পরবর্তী ২০১৮ সালে অপেন হার্ট বাইপাস সার্জারী অপারেশন করা হয়েছে। ডাক্তারী পরামর্শ অনুযায়ী দীর্ঘদিন বেড রেষ্টে থাকতে হয়েছে। বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের আমলে দারুল হুদা দাখিল মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি ঘোষনার পর সভাপতি ও প্রতিষ্টাতা সুপার মোঃ ইমান আলীর স্বাক্ষরে ৭ জন শিক্ষক কর্মচারীর তালিকা এমপিও’র আবেদন করা হলেও সুপার বাদে ৬ জনের এমপিও পাস হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসা সুপারের সাথে সভাপতির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিরোধ থাকায় গত বছরের ২৩.৫.২০২০ইং রমজান মাসে হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসারের সভাপতিত্বে (ডিইও) কার্য্যালয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক মন্ডলী, জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রধান, সমাজপতি ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তাদের বিরোধ মিমাংসা হলেও সুচতুর মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এডভোকেট রহমতে এলাহী সকলের অজ্ঞাতসারে সুপারের বিরুদ্ধে মিথ্যা এক অভিযোগ ডি ডি কার্য্যালয়ে দাখিল করা হলে সুপারের এমপিও আবেদন বাতিল করা হয়। সভাপতি কর্তৃক দাখিলকৃত মিথ্যা অভিযোগপত্রে শিক্ষক কর্মচারি একজনও সুপারের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর করেন নি। মিথ্যা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দীর্ঘ ৬ মাস আটকে রেখে সভাপতি সুপারের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমুলক দরখাস্থ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সভাপতির বিরুদ্ধে। এমনকি সভাপতি রহমতে এলাহী সুপার মোঃ ইমান আলীকে মাদ্রাসায় যেতে হুমকিসহ বাধা প্রদান করছেন। সুপার মোঃ ইমান আলীর অনুপস্থিতির সুযোগে নতুন এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার বিভিন্ন অফিসের খরছ বাবত ৬ শিক্ষক কর্মচারীর কাছ থেকে এককালিন ৫ লক্ষ টাকা গ্রহন করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের অগোচরে কমিটির মেয়াদ শেষ হবার সময়ে একাধিকবার নিয়োগ বানিজ্য করার ধান্ধায় ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন মাদ্রাসার সভাপতি। দারুল হুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা, উদ্যোক্ত ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের পক্ষে এডভোকেট রহমতে এলাহীর বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে মসজিদ নির্মানে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগসহ মাদ্রাসার বিভিন্ন বিষয়ে সুস্পষ্ট অভিযোগপত্র উপ পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, সিলেট অঞ্চল, সিলেট বরাবর দাখিল করা হলেও তার অবৈধ ক্ষমতার জোরে কোন ফলোদয় হচেছ না। মসজিদ নির্মানে এলাকাবাসী, প্রবাসি দাতাদের নামের তালিকা সহ অনুদানের কোন হিসাব এলাকাবাসী জানে না। এদিকে দারুল হুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার এমপিও আবেদন ফরোয়ার্ডিং ফরমে প্রতিষ্টাতা সুপার মোঃ ইমান আলীর এমপিও আবেদনে সরকারের নিকট ৩০০/০০ টাকার স্টাম্পে প্রদত্ত অঙ্গীকার নামায় সভাপতি এডভোকেট রহমতে এলাহী সাক্ষর করেছেন। উল্লেখ্য যে, দারুল হুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সার্বিক আয় ব্যয় সভাপতি ও তার ভাই আইয়ুব আলীর মর্জিমত চলে। এ ক্ষেত্রে মাদ্রাসার একাউন্ট ব্যবহার হয় না। রেজিষ্টেশন ফি, পরিক্ষার ফি, ফরম ফিলাপ ফি সরকারি শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত ফি এর কয়েকগুন বেশী আদায় করা হয়। ফি আদায়ের ক্ষেত্রে রসিদ দেওয়া হয়না বলে অভিযোগ আছে। অষ্টম ও দশম শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রী যারা বোর্ড ফাইনাল পরিক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছে তাদেরকে বোর্ড প্রদত্ত পরিক্ষা পাস সনদ প্রদানের সময় দুইশত থেকে পাচশত টাকা বিনা রসিদে আদায় করে সার্টিফিকেট দেওয়া হয় বলে এলাকার সাধারণ ভুক্তভোগী অভিভাবকের অভিযোগ রয়েছে। শতভাগ সফলতা অর্জন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. জাফর আহমদ খান প্রদত্ত খান বাহাদুর এহিয়া পদক (২০০৮ সাল) প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্টান দারুল হুদা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা ঐতিয্যবাহী সুলতানশি গ্রামের সৈয়দ আবু সালেক মোঃ ইব্রাহিম (মরহুম) এর রেখে যাওয়া মাদ্রাসাটি রক্ষায় এলাকাবাসী সচেষ্ট রয়েছেন।
Leave a Reply