February 27, 2021, 1:12 pm
স্টাফ রিপোর্টার ঃ হবিগঞ্জের নতুন এমপিওভুক্ত বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে হবিগঞ্জ দারুছুন্নাহ কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ফারুক মিয়ার নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী নিয়োগ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। অবশেষে শিক্ষা অফিসের দুর্নীতি বন্ধ করতে এমপিও আবেদনের নিয়মে পরিবর্তন এনে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে ২৩ নভেম্বর ২০২০ইং। প্রজ্ঞাপনে এমপিও ফাইল মাদ্রাসা প্রধান প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ১০ তারিখের মধ্যে সংশোধিত নীতিমালার আলোকে সরাসরি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরন করবেন। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ২০ তারিখের মধ্যে এমপিও ছাড়করনের জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের নিকট প্রস্তাব প্রেরন করবেন। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ ওই মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে মঞ্জুরী প্রদান করবেন। অভিযোগে প্রকাশ, হবিগঞ্জের নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া চুনারুঘাটের হাজী জোবায়দা সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা,সদরের শরীফাবাদ দাখিল মাদ্রাসা, চান্দপুর দাখিল মাদ্রাসা, দারুল হুদা দাখিল মাদ্রাসা ও নূরে মোহাম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসার সংশ্লিষ্ট কমিটির সাথে চুক্তি করে উক্ত প্রতিষ্ঠান গুলোতে নিয়োগ বাণিজ্য করার লক্ষ্যে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্ব নেন হবিগঞ্জ দারুছুন্নাহ কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ফারুক মিয়া। তিনি লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক কর্মচারীদের বাদ দিয়ে অভিজ্ঞতাহীন ও অনিবন্ধিত লোকদেরকে শিক্ষক কর্মচারী পদে ভুয়া রেজুলেশন, ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, ভুয়া ইন্টারভিউ বোর্ড দেখিয়ে ১৫ বছর আগে ২০০৪-২০০৫ সালে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে বেশকিছু শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির আবেদন সাবমিট করেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসার মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভুয়া নিয়োগের এসব ফাইল অনুমোদন দিয়ে সিলেট ডিডি অফিসে প্রেরণ করেন। সিলেট ডিডি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আতাত করে প্রিন্সিপাল ফারুক মিয়া কোনো কোনো ভুয়া ফাইল এমপিভুক্ত করিয়েও নিয়েছেন। ভুয়া ফাইলের মধ্যে দারুল হুদা মাদ্রাসার ৬২ বছর বয়সের লোককেও এমপিওভুক্তি করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রিন্সিপাল ফারুক মিয়ার নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সিলেট ডিডি অফিসে বেশ কয়েকজনের ফাইল আটকে যায়। ফাইল আটকে যাওয়ার পর টাকা ফেরত চেয়ে প্রিন্সিপাল ফারুক মিয়া কে ভুক্তভোগীরা চাপ দিলে আগামী মাসের এমপিওতে এমপিওভুক্তি হবে বলে গত চারমাস ধরে তাদের সাথে নানা রকম টালবাহানা করে আসছেন। ইতিমধ্যে তিনি সিলেট ডিডি অফিসে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রতি মাসে এক দুজন করে ফাইল ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। চুনারুঘাটের হাজী জোবায়দা সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার রেজুলেশন থেকে শুরু করে ইন্টারভিউ বোর্ড পর্যন্ত সবকিছুই জালিয়াতি করে ফারুক মিয়ার হাতের তৈরি হলেও ওই ভুয়া ফাইল থেকে এ পর্যন্ত ৮ জন শিক্ষক কর্মচারী ফারুক মিয়ার তদবিরে চুনারুঘাট উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল হকের আশীর্বাদে এমপিওভুক্ত হয়ে গেছেন। এভাবে প্রতিটি ভুয়া ফাইল ছাড়ানোর জন্য ফারুক মিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে সিলেটের ডিডি অফিস পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করছেন। ভুক্তভোগী কয়েকজনের সাথে এ প্রতিনিধির কথা হলে তারা জানান, ফারুক মিয়া প্রতি মাসেই “আগামী মাসে হয়ে যাবে ” এ কথা বলে আমাদের সাথে সময়ক্ষেপণ করছেন। আগামী মাসে যদি আমাদের এমপিও ছাড় না হয় তাহলে আমাদের টাকা ফেরত দিতে তাকে বাধ্য করা হবে। উল্লেখ্য যে, দেশে করোনা ভাইরাসের কারনে মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। মাদ্রাসাসহ বহুমুখী সব শিক্ষা প্রতিষ্টানই বন্ধ থাকলেও জালিয়াতি করে তৈরি সাবমিট করা কাগজ পত্র কোনো প্রকার যাচাই বাছাই না করেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হয়ে সিলেটের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে গিয়েও এসব ভুয়া কাগজপত্রে কারো কারো এমপিওভুক্ত হওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ ও উপ পরিচালক মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অঞ্চল সিলেট কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির আহম্মদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্যাটার্ন বহিঃভুত নিয়োগ দিয়েছেন।
Leave a Reply